যৌন আনন্দ লাভের আগেই বীর্য বের হয়ে যাওয়া সমস্যার সমাধান কি?
যৌন আনন্দ লাভের আগেই বীর্য বের হয়ে যাওয়া সমস্যার সমাধান কি?
যৌন আনন্দ লাভের আগেই বীর্য বের হয়ে যাওয়া সমস্যার সমাধান কি? |
প্রতিবারই স্ত্রীর যৌন আনন্দ লাভের অনেক আগেই যদি স্বামীর বীর্য বের হয়ে যায়, তবে সেটা স্ত্রীর পক্ষে অবশ্যই হতাশাজনক। সেই হতাশার বশে অনেকেই ভুল পদক্ষেপ করে ফেলে যা পরবর্তীকালে অশেষ শারীরিক ও মানসিক অশান্তির কারণ হয়।
স্বামী স্ত্রী দু জনের ভিতর তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবেন না, তাতে হীতে বিপরীত হতে পারে। নিজেদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।স্ত্রী স্বামীর সাথে কথা বলে কোন ভাল সেক্সোলজিষ্ট বা relationship councilor -এর কাছে নিয়ে যান। কারণ খুব তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হওয়া (শীঘ্রপতন) মূলত একটি মানসিক সমস্যা। সেক্সোলজিষ্ট বা কাউন্সিলর ওনার সাথে কথা বলে ওই সমস্যা কেন হচ্ছে তার কারণ বুঝতে পারবেন ও কিভাবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেটা বলতে পারবেন। যোনির মধ্যে লিঙ্গ প্রবেশ করানোর ১ থেকে দুই মিনিটের বীর্য বের হয়ে যায় তবেই ডাক্তারি পরিভাষায় তাকে শীঘ্রপতন বলা হয় (এখানে উল্লেখযোগ্য যে গড়ে 7 মিনিটের মধ্যেই পুরুষদের বীর্যস্খলন হয়ে যায়।)। শীঘ্রপতনের কারণ কি তা সঠিক জানা যায় নি, তবে একাধিক কারণ অনুমান করা হয়। যেমন বয়ঃসন্ধির সময় অতিরিক্ত হস্তমৈথুন ও সেই সময় কেউ যাতে দেখে না ফেলে সেজন্য দ্রুত বীর্যস্খলনের চেষ্টার ফলে সেটাই অভ্যাসে পরিণত হয়। এছাড়াও অশান্তি, দুশ্চিন্তা, বৌকে সুখি করতে না পারার মানসিক চাপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শরীরে কোন আঘাত ইত্যাদির জন্যেও শীঘ্রপতন হতে পারে। কিছু কিছু ঔষধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ফলে এবং নিয়মিত যৌনমিলন না করলেও দ্রুত বীর্য বের হয়ে যেতে পারে। প্রায় ৩০ শতাংশ পুরুষ জীবনের কোন না কোন সময়ে শীঘ্রপতনের শিকার হয়।
তাড়াতাড়ি বীর্য বের হয়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার একটি পদ্ধতি হল “কেগেল এক্সারসাইজ (Kegel Excersice)”। যে পেশীসমূহ ব্যবহার করে প্রস্রাবের বেগ আটকানো যায় ঠিক সেই পেশী ব্যবহার করে বীর্যপতনও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ওই পেশীর নাম হল PC muscle। PC পেশীর এক্সারসাইজ করতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে কোনটা PC পেশী এবং তাকে কি করে খুঁজে বের করা যায়। সেজন্য গোড়াতে প্রস্রাব করতে বসে মাঝপথে প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করা বা বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন সেইসময় তলপেট, পা কিংবা নিতম্বের পেশী যেন ব্যবহার করা না হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিবেগ যেন স্বাভাবিক থাকে। যদি মূত্র ত্যাগের বেগ ধীরে হয় বা তা একেবারে বন্ধ হয়ে যায় তবে যে পেশীতে চাপ দিতে হয়েছিল সেটাই PC পেশী। এরকম কয়েকবার করলেই বোঝা যাবে কি করে PC পেশীকে সংকুচিত করা বা প্রসারিত করা সম্ভব। এরপর নিয়মিত দিনে তিনবার করে নিচে লেখা এক্সারসাইজ করতে হবে –
১) ৫ সেকেন্ড ধরে PC পেশী সংকুচিত করুন (ভেতরের দিকে টানুন),
২) এরপর ৫ সেকেন্ড ধরে ধীরে ধীরে PC পেশী ছাড়ুন,
৩) উপরোক্ত পদ্ধতি ১০ বার করুন।
কেগেল এক্সারসাইজ করলে যে শুধু বীর্যপতনের উপর নিয়ন্ত্রণ আসে তাই নয়, লিঙ্গের উত্তেজিত অবস্থায় দৈর্ঘ্যও বাড়তে পারে এবং তা আরও শক্ত হতে পারে। মহিলারাও এই এক্সারসাইজ করতে পারেন। তাতে তাদের যোনির ভেতরের দেওয়ালের পেশীর উপর নিয়ন্ত্রণ আসে এবং যৌনমিলনের সময় তারা প্রবিষ্ট লিঙ্গের উপর বিভিন্ন উপায়ে চাপ দিয়ে যৌন আনন্দ প্রভূত পরিমাণে বাড়াতে পারেন।
বীর্যপতন নিয়ন্ত্রণ করার অপর একটি পদ্ধতি হল “স্টার্ট-স্টপ টেকনিক”। যৌনমিলনের সময় যখন মনে হবে যে আর একটু করলেই বীর্য বের হয়ে যাবে, তখনই থেমে যান। এরপর কিছুক্ষণ একে অপরকে আলিঙ্গন, চুম্বন ইত্যাদি করুন। যখন মনে হবে উত্তেজনা একটু কমেছে, তখন আবার শুরু করতে পারেন। এতে যৌনমিলনের সময় দীর্ঘায়িত হবে। আর হ্যাঁ, শুরুর থেকে একটু ধীরে করুন। কথায় বলে যে তাড়াহুড়োয় কখওনো মহৎ কাজ হয় না! সেটা মাথায় রাখতে হবে। এছাড়াও লিঙ্গ যোনির মধ্যে প্রবেশ করানোর আগে কিছুক্ষণ ওরাল সেক্স করে নেওয়া যেতে পারে। কিংবা অঙ্গূলীও ব্যবহার করতে পারেন। যখন আপনার স্বামী আপনাকে আদর করছে সেইসময় আপনি নিজেও নিজের ক্লিটোরিস উত্তেজিত করতে পারেন। তাতে আপনার অর্গ্যাজম ত্বরন্বিত হবে। দেখা গেছে যে মহিলাদের ক্ষেত্রে সেক্সের থেকে ক্লিটোরিস উত্তেজিত করলে অর্গ্যাজমের সম্ভাবনা অনেক বেশি। আরেকটা জিনিস যেটা আপনি করতে পারেন তা হল আপনার স্বামী লিঙ্গ ভেতরে প্রবেশ করানোর পর কিছুক্ষণ তাকে স্থির থাকতে বলুন। সেই সময় আপনি আপনার যোনির ভেতরের দেওয়াল দিয়ে লিঙ্গের উপর বিভিন্ন উপায়ে চাপ সৃষ্টি করুন। দেখবেন দুজনেরই ভাল লাগবে। এছাড়াও বিভিন্ন পোজে সেক্সকরে দেখতে পারেন। হয়তো কোন নির্দিষ্ট পোজে (যেমন “ওমেন অন টপ”) আপনার স্বামীর বীর্যপতন বিলম্বিত হবে। এছাড়াও যৌনমিলনের সময় কন্ডোম ব্যবহার করলে তা পেনিসের সংবেদনশীলতা কম করে বীর্যপতন বিলম্বিত করতে পারে। কিছু কিছু বিশেষ “Long Lasting” কনডম লিঙ্গের সংবেদনশীলতা কমিয়ে দিতে পারে। যেমন, Skore NotOut Climax Delay Condoms 10’s (Pack of 4), Durex Condom – Extended Pleasure (10s) ।
পড়ুন মিলনে তীব্র ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ব্যর্থ হচ্ছেন মেয়েরা। কিন্তু কেন, ভ্যাজাইনিমাস নয়তো?
নিয়মিত যৌনমিলন করলেও বীর্য বের হতে সময় বেশি লাগবে। যৌন মিলনের পূর্বে Dapoxetine ট্যাবলেট খেলেও বীর্যস্খলন বিলম্বিত হয়। তবে এই ঔষধ কিনতে ডাক্তারের প্রেসকিপশন লাগে, কারণ এই একই ঔষধ মানসিক অবসাদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও Tramadol ট্যাবলেটও ব্যবহার করা হয় শীঘ্রপতন ঠিক করার জন্য। কিছু কিছু জেল বা স্প্রে (যেমন lidocaine) পাওয়া যায় যা যৌন মিলনের ১০-১৫ মিনিট আগে লিঙ্গে প্রয়োগ করলে তা লিঙ্গের সংবেদনশীলতা কমিয়ে বীর্যপতন দেরি করতে পারে। তবে এইসব ঔষধের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।
প্রয়োজনে উপযুক্ত ডাক্তার কিংবা councilor -এর পরামর্শ নিন। ডাক্তারের কাছে যেতে আবার লজ্জা কিসের? ভাল থাকুন।
আপনার ডক্টর হেল্থ সাইটে কোন প্রকার অশ্লীল আর্টিকেল দেওয়া হয় না। মূলত যৌন জীবনকে সুস্থ্য, সুন্দর ও সুখময় করে তোলার জন্য জানা অজানা অনেক কিছু তুলে ধরা হয়।এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন, আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব। ধণ্যবাদ আপনার ডক্টর হেল্থ সাইটের সাথে থাকার জন্য।
সূত্র:গুপ্তকথা.কম
Comments
Post a Comment