বিদেশি ব্যাংকে কালো টাকার পাহাড় গড়েছেন কারা? সেই টাকার পরিমাণ কত?



আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দেশের কালো টাকা উদ্ধারে নেমেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিদেশে গচ্ছিত ভারতীয়দের টাকাও উদ্ধার করবেন। কিন্তু সেই টাকার পরিমাণ কত? কারা কারা রয়েছেন সেই তালিকায়?

এখন এই প্রশ্ন খুব বেশি করে উঠছে। ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিদেশে গচ্ছিত ভারতীয়দের টাকাও উদ্ধার করবেন। সরকার গঠনের পরেই তিনি তৈরি করেন বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা। কালো টাকা উদ্ধারের জন্য সংসদে বিল পাশ করিয়েছে বিজেপি। কিন্তু তার পরেও অনেকটা সময় পার হয়ে গেলেও সেই টাকা উদ্ধারে বিশেষ অগ্রগতি দেখাতে পারেনি মোদি সরকার।

তবে একটি সাফল্য পেয়েছে কেন্দ্র। সুইজারল্যান্ড সরকার সুইস ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা সম্পর্কে তদন্তের প্রয়োজন হলে ভারত-সহ অন্য দেশগুলিকে তথ্য সরবরাহ করতে পারে জানানোর পরে ভারতের হাতে তালিকাও এসেছে। এমনকী প্রাসঙ্গিক তথ্য জানানোর জন্য সে দেশের আইন সংশোধন করার কথা ভাবা হচ্ছে বলেও জানান সুইজারল্যান্ডের আর্থিক বিষয়ক মন্ত্রী জে এন এস আম্মান। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

এর পরে ২০১৫ সালের ২৬ মে কালো টাকা উদ্ধারে ভারতের জন্য উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ


করে সুইৎজারল্যান্ড। সুইস ব্যাঙ্কে টাকা রেখেছেন, এমন দু’জন ভারতীয়ের নাম প্রকাশ করে তারা। তাঁদের নাম স্নেহলতা সাহানি ও সঙ্গীতা সাহানি। তবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তৃত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। পরের দিন অর্থাৎ ২৭ মে সুইস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, এমন আরও কয়েক জন ভারতীয়ের নাম প্রকাশ করে সুইজারল্যান্ড। এঁরা হলেন শিল্পপতি যশ বিড়লা, গুরজিত সিংহ কোচার, দিল্লির ব্যবসায়ী রিতিকা শর্মা।

সরকারিভাবে এই তালিকা ভারতের হাতে এলেও আসল তালিকা যে অনেক বড় তা আগেই জানায় সিবিআই। ২০১২ সালের হিসেব মতো সুইস ব্যাঙ্কে সঞ্চিত ভারতীয়দের কালো টাকার পরিমাণ ছিল ৫ লক্ষ কোটি ডলার। এর পরে সুপ্রিম কোর্টে ২০১৪ সালের এপ্রিলে কেন্দ্র জার্মান সরকারের থেকে পাওয়া ২৬ জনের একটি তালিকা জমা দেয়। সেই তালিকায় কাদের নাম রয়েছে সেটা অবশ্য প্রকাশ্যে আনা হয়নি।

এর আগে বহুজাতিক ব্যাঙ্ক এইচএসবিসি-র জেনেভা শাখা প্রকাশিত একটি তালিকা বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। সেই তালিকায় ১,১৯৫ জন ভারতীয়ের নাম ছিল। এমন অনেক তালিকাই বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়। ২০১৬ সালেই পানামার একটি সংস্থা বিদেশে কালো টাকা গচ্ছিত রয়েছে এমন ভারতীয়দের একটি তালিকা প্রকাশ করে। তাতে অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের নামও ছিল। এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী-সহ একাধিক কংগ্রেস নেতার নাম পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু এগুলির সত্যতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল রাজনীতিতে আসার পরে-পরেই দেশের শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে বিদেশে কালো টাকা রাখার অভিযোগ তোলেন। ২০১২ সালের ৯ নভেম্বর সাংবাদিক সম্মেলন করে সেই তালিকা প্রকাশ করেছিলেন কেজরীবাল।

তখনও আম আদমি পার্টি তৈরি হয়নি। তখনকার ইন্ডিয়া এগেইনস্ট কোরাপশনের নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল সুইস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টধারীদের নাম প্রকাশ করেন। এইচএসবিসি ব্যাঙ্কের জেনেভা শাখায় মোট ৭০০ জন ভারতীয়ের কালো টাকা গচ্ছিত রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। ভারত সরকারও সেই তথ্য জানে বলেও অভিযোগ করেন কেজরীবাল।

তাঁর দাবি ছিল, এইচএসবিসির জেনেভা শাখায় ৭০০ জন ভারতীয়ের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাঁদের নামের তালিকা ভারত সরকারের কাছে থাকা সত্ত্বেও সরকার অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। সেই তালিকায় দেশের বেশ কয়েকজন বড় শিল্পপতির নাম ছিল। যদিও পরবর্তীকালে কেজরীবালকে সেই তালিকা নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে শোনা যায়নি। -এবেলা।
১৪ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Comments

Popular posts from this blog

বীর্য ঘন করার সবগুলি উপায় জানুন । কাজে লাগবে

স্বপ্নদোষ হলে ও হস্তমৈথুন করলে কি বিবাহিত জীবনে সমস্যা হয়?

যৌন মিলন কিভাবে করতে হয় বিস্তারিত